আমাদের পরিবারের কিংবা চারপাশের জানাশোনা অনেকেই নাক ডাকার সমস্যায় ভুগছেন। এতে তার সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যরা প্রায়শই ভোগান্তিতে পড়েন। এটি একটি সাধারণ সমস্যা, যা আপনার ঘুমকে ব্যাহত করতে পারে। যখন কারও নাক বা মুখ দিয়ে বাতাস সহজে প্রবাহিত হতে পারে না, তখনই তিনি নাক ডাকেন। মৃদু বা মাঝে মাঝে নাক-ডাকা, সাধারণত উদ্বেগের কারণ নয়। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী নাক ডাকা স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো কিছু স্বাস্থ্যগত অবস্থার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
নাক ডাকা কি স্বাভাবিক?
নাক ডাকা অনেক লোকের জন্য সাধারণ (এবং স্বাভাবিক)। প্রকৃতপক্ষে, শিশু এবং ছোট শিশু সহ প্রায় প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সময়ে নাক ডাকে
কিন্তু জোরে নাক ডাকা অনেক সময় স্লিপ অ্যাপনিয়া নির্দেশ করে। স্লিপ এপনিয়া - এমন একটি সমস্যা যা হলে ঘুমের সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। যদি নাক ডাকাকালীন অ্যাপনিক এপিসোড হয় (অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে কেউ বাতাসের জন্য হাঁপাতে থাকে) এবং সারাদিন ক্লান্তি ভাব বা মেজাজ খিটখিটে থাকে, তাহলে আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত।
নাক ডাকার কারণ
নরম তালু, টনসিল , এডিনয়েডস ,ভারী এবং বড় জিহ্বা; এসব বিষয় নাক ডাকার অন্যতম কারন। এছাড়া নাক ডাকা এবং ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাধি এমন ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি, যাদের ওজন বেশি বা BMI, 25- বা 30-এর বেশি ।
নাক ডাকা কি খারাপ ?
নাক ডাকা অগত্যা খারাপ নয়। আমাদের অধিকাংশই আমাদের জীবনের কোনো না কোনো সময় নাক ডাকে। কিন্তু আপনি যদি জোরে নাক ডাকেন বা নাক ডাকার ফলে আপনার ঘুমের মান ব্যাহত হয় তবে এখনই একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীকে দেখার সময়।
নাক ডাকার জন্য কি ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করবেন ?
আপনার সরবরাহকারীকে নাক বন্ধ করার জন্য ওষুধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন।
১. সক্রিয় থাকুন, প্রচুর ব্যায়াম করুন এবং আপনার জন্য স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন।
২. বায়ু প্রবাহ উন্নত করতে ঘুমের সময় আপনার মাথা উঁচু করুন।
৩. আপনার পিঠের পরিবর্তে আপনার পাশে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৪.নাক ডাকা কমানোর বালিশ কিনুন যা আপনার ঘুমের সময় আপনার মাথাকে সঠিক অবস্থানে রাখে।
৫. শোবার আগে সেডেটিভ (যেমন জোলপিডেম, ক্লোনাজেপাম এবং এসজোপিক্লোন) বা অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।
৬. ওষুধ । ঠাণ্ডা এবং অ্যালার্জির কারণে অনেক সময় নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং ঠাণ্ডা বা এলার্জির ওষুধ খেলে আপনাকে অবাধে শ্বাস নিতে সাহায্য করে
৭. মৌখিক যন্ত্রপাতি বা অনুনাসিক স্ট্রিপ
এরপরেও যদি আপনার নাক ডাকা বন্ধ না হয়, ঘুম ব্যাহত হয়, সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থাকে, ক্লান্তি লাগে, মেজাজ খিটখিটে থাকে তাহলে আপনার উচিত একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের সাথে দ্রুত পরামর্শ করা । কারণ জোরে নাক ডাকা বা স্লিপ এপনিয়ার জন্য আমাদের রক্তে অক্সিজেনের পরিমান কমে যায়, রক্তচাপ বেড়ে যায়, হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস বা স্ট্রোকের ঝুকি বেড়ে যায়।