পায়ের সৌন্দর্য মলিন হয়ে যায় যদি ফাটে গোড়ালি। তবে শুধু রূপ বজায় রাখতেই নয় সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলেও পায়ের যত্ন নেওয়া উচিত। আর শীতসহ যে কোনো ঋতুতে যাতে এই সমস্যা এড়ানো যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া যায় সহজেই। এই বিষয়ে ওয়েবএমডি ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটন নিবাসী চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ডেবরা জালিম্যান বলেন, “ফাটা গোড়ালি বা ‘হিল ফিশার্স’ তখনই হয় যখন পায়ের পাতা ও গোড়ালির ত্বক শুষ্ক ও শক্ত হয়ে যায়।”
শুধু শীতে নয়, গোড়ালি ফাটার আরও কারণ থাকতে পারে। যেমন-
শারীরিক সমস্যার কারণেও পা ফাটার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হাইপোথায়রয়ডিজম: এটা হলে থায়রয়েড গ্রন্থি নির্দিষ্ট হরমোন পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি করতে পারে না।
জুভেনাইল প্ল্যান্টার ডার্মাটোসিস: এক ধরনের চর্মরোগ যা শিশুদের হয়।
শোগ্রিন্স সিন্ড্রোম: দীর্ঘস্থায়ী একটা রোগ, এই পরিস্থিতিতে দেহ পর্যাপ্ত আর্দ্রতা তৈরি করতে পারে না।
অ্যাথলেট’স ফুট: এক ধরনের ফাঙ্গাসের সংক্রমণ।
হিল স্পার্স: গোড়ালি হাড় প্রসারিত হয়ে যাওয়া।
গোড়ালি ফাটা সারাতে
বেশিরভাগ সময় ঘরোয়া চিকিৎসাতেই গোড়ালি ফাটার সমস্যা দূর করা যায়। এজন্য ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ঘন ক্রিম মাখতে হবে, যেগুলো আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ধাপে ধাপে যেভাবে করতে হবে-
যেসব উপাদান ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজারে থাকলে ভালো ফল দেবে, সেগুলো হল- ইউরিয়া, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, আলফা-হাইড্রোক্সি অ্যাসিড, স্যাকরাইড আইসোমেরিট, ল্যাক্টিক অ্যাসিড।
লেবেল দেখে এই ধরনের উপাদান সমৃদ্ধ ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার কেনার পরামর্শ দেন ডা. জালিম্যান। এগুলো ত্বক নরম করার পাশাপাশি মরা চামড়া দূর করতে সাহায্য করে। তবে এসব উপাদান অনেকের ত্বকে অল্প অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।
চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যখন জরুরি
যদি বারবার গোড়ালি ফাটে আর সহজে সারতে না চায় তবে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
এছাড়া পায়ের পাতা, গোড়ালি ও পায়ের নিম্নাংশের সমস্যা বিষয়ক চিকিৎসক ‘পোডায়েট্রিস্ট’য়ের কাছেও যাওয়া বেশি উপকারী হবে।
গোড়ালি ফাটা প্রতিরোধ করতে
নিয়মিত গোড়ালি পরীক্ষা করা উচিত। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে। যেসব বিষয়ে নজর দিতে হবে সেগুলো হল-
প্রতিদিন পা ধোয়া: কুসুম গরম পানি দিয়ে পা ধুয়ে, ভালো মতো শুকিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে গোড়ালি ও পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে যেন ভেজাভাব না থাকে। তারপর হালকা করে পাউডার মাখতে হবে আঙ্গুলে। এতে পায়ে ভেজাভাব থাকবে না, ফলে সংক্রমণ হওয়ার হাত থেকে বাঁচবে।
নখ ছোট রাখা: পায়ের আঙ্গুলের নখ ছোট ও অগ্রভাগ সমান্তরাল রাখা জরুরি। এতে নখ ভেতরের দিকে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা রোধ হবে।
ভালো জুতা পরা: পরিষ্কার, হালকা নরম শুকতলির এমন জুতা পরতে হবে যাতে পায়ে কোনো অস্বস্তি না হয়। ভালো ভারসাম্য দেয়। দিনের শেষে জুতা কিনতে যাওয়া উচিত। কারণ সারাদিন পর পা কিছুটা হলেও ফোলে।
পা আবহাওয়া থেকে রক্ষা করা: গরম আবহাওতে এমন জুতা ব্যবহার করতে হবে যাতে পা ঢেকে থাকে। পায়ে সানস্ক্রিন মাখাও জরুরি।
যদি রাতে পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়, তবে শোয়ার সময় মোজা পরা উচিত।
শীতের সময় পা গরম ও শুষ্ক রাখতে ভালো জুতা মোজা পরতে হবে।