নিজস্ব প্রতিবেদক: হাসিনাকে পিলখানা, শাপলা চত্বর, জুলাই-আগস্টের গণহত্যাসহ সকল অপরাধের মাস্টার মাইন্ড উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে খুনি শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে।
১৮ জানুয়ারি সকাল ৯টায় বুড়িচং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এইসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এ বিচারটি দেখতে চায়। শেখ হাসিনার বিচার করে যদি নির্বাচন দেওয়া হয়, তাহলে সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। বাংলাদেশের মানুষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাশে থাকবে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে নগ্নভাবে ধ্বংস করেছে। শেখ হাসিনার বিচারের জন্য জাতি আজ অঙ্গীকারাবদ্ধ। তার বিচারের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী বর্তমানে দেশের মানুষের ভালোবাসার দলে পরিণত হয়েছে।
বুড়িচং উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক অহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন,
‘খুনি হাসিনা’ সাবেক আমীরে জামায়াত শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা, শহীদ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, শহীদ মীর কাসেম আলীসহ শীর্ষ নেতাদেরকে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে হত্যা করেছে। বিগত ১৫ বছর সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন ও নির্যাতন চালিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের উপর। ফ্যাসিবাদী আমলে গোটা বাংলাদেশকে একটি বৃহৎ কারাগারে রূপান্তরিত করেছিল।
তিনি আরোও বলেন, আগস্টের কয়েক দিন আগে পরিপত্র জারি করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ। ৫ আগস্টের পর সেই আওয়ামী লীগকে মানুষ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণে বাংলাদেশে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই আন্দোলনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। আন্দোলন দমাতে জমিন ও আকাশ থেকে গুলি করা হয়েছিল। তারপরেও আন্দোলন বন্ধ করা যায়নি। ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা তার এমপি-মন্ত্রীদের নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ৫৩ বছরের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর দুইজন মন্ত্রী তিনটি মন্ত্রণালয় সততা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে পরিচালিত করেছে, যা সারা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের দুর্নীতি খুঁজে পাওয়া পায়নি। ছাত্রজনতার আন্দোলনের ১ হাজার ৬৫১ জন ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময় আজ আমরা নতুন একটি পরিবেশ পেয়েছি। এই পরিবেশকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশকে ভারতের করদ রাজ্যে যাতে পরিণত করতে দেওয়া হবে না। ভারতের ইচ্ছায় যাতে দেশ পরিচালিত না হয় যে দিকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরী আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল মতিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. মোবারক হোসাইন, উত্তর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আলমগীর সরকার, উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহিদ, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক নোমান হোসেন নয়ন।
উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা আবুল হোসাইন এর পরিচালনায় কর্মী সম্মেলনে সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা মঈনুল ইসলাম।