ঢাকা বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২
gonojog24
Bongosoft Ltd.

পাকিস্তানে বিরোধী জোটের নতুন নির্বাচন দাবী- সংবিধান সুরক্ষা আন্দোলন


গণযোগ | বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০৩:২১ পিএম আপডেট: জুলাই ১, ২০১৯ ১১:৩৯ এএম পাকিস্তানে বিরোধী জোটের নতুন নির্বাচন দাবী- সংবিধান সুরক্ষা আন্দোলন
বিরোধী রাজনৈতিক জোটের জাগরণের প্রতিকী ছবি

 

ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০২৫:

পাকিস্তানে বিরোধী দলের একটি জোট বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন, ভিন্নমত খর্ব এবং মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ এনে নতুন জাতীয় নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে।

তেহরিক-ই-তাহাফুজ-ই-আইন-ই-পাকিস্তান (সংবিধান সুরক্ষা আন্দোলন) ইসলামাবাদে দু’দিনের সম্মেলন শেষে সকল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দাবী এবং গত বছরের সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

“দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সঙ্কটের জন্য ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল সরাসরি দায়ী,” সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে বলা হয়।

 

ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে, পাকিস্তানের সংসদের কোন “নৈতিক, রাজনৈতিক বা আইনগত অবস্থান” নেই, কারণ এই সংসদ এসেছে একটি জালিয়াতির ভোট থেকে। “একটি অবাধ, ন্যায্য এবং স্বচ্ছ নির্বাচনই বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের এক মাত্র পথ,“ ঘোষণাপত্রে বলা হয়।

শরিফের সরকার বিরোধীদলের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দাবী করে যে, সংস্কারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা ব্যাহত করার জন্য বিরোধীদের এইসব অভিযোগ। ধারণা করা হয়, শরিফের সরকারের পেছনে দেশের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সমর্থন রয়েছে।

কারাবন্দী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহরিক-এ-ইনসাফ পার্টির নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অফ রেপ্রেজেন্টেটিভস-এ রিপাবলিকান দলের সদস্য জো উইলসন সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ ঘোষণা দেন যে “পাকিস্তানে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা” করার লক্ষে একটি বিলের খসরা “প্রায় লেখা শেষ” হয়েছে। উইলসনের পোস্টের একদিন পরেই ইসলামাবাদে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

 

উইলসন বলেন যে, তার প্রস্তাবিত বিল পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনেরাল আসিম মুনিরের উপর “৩০ দিনের বিবেচনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ” এবং “সকল জেনেরাল এবং সরকারী কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারদের নিষেধাজ্ঞার জন্য পর্যালোচনা” করার ম্যান্ডেট দেবে। তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেন নি

 

উইলসন এবং রিপাবলিকান রেপ্রেজেন্টেটিভ অগাস্ট ফ্লুগার মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র কাছে চিঠি লিখে “ইমরান খানকে মুক্ত করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক সরকারের” সাথে আলোচনার করার আহ্বান জানান।

ভিওএ যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের দাবী সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য পাকিস্তানী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করে কিন্তু তাৎক্ষনিক কোন জবাব পায়নি।

ওয়াশিংটন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউট-এর পরিচালক মাইকেল কুগেলমান সতর্ক করে বলেন যে, ইউলসনের বিল পাকিস্তানের জন্য সমস্যা নিয়ে আসতে পারে।

“এই বিল পাস হলে এটা সত্যিই বড় ঘটনা হবে। পাকিস্তানে গণতন্ত্রের উপর আক্রমণের নিন্দা করা এক জিনিষ, কিন্তু নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয়া হবে ভিন্ন মাত্রার খেলা,” কুগেলমান ভিওএ’কে লিখিত মন্তব্যে বলেন।

“অবশ্য, কংগ্রেসের কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী নীতির প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু পাকিস্তানের নেতৃত্ব চাইবে না যে, বৃহৎ পরিসরে পাকিস্তান নিয়ে ওয়াশিংটনের মেজাজ এই ভাবে প্রতিফলিত হোক,” তিনি বলেন।

ইমরান খানকে অপসারণ

ইমরান খান তার বিরুদ্ধে মামলা এবং তার রাজনৈতিক দলের উপর দমন-পীড়নের জন্য বার বার জেনেরাল মুনিরকে দায়ী করেছেন।

এই ৭২-বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সংসদে আস্থা ভোটে পরাজিত হলে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে তাঁকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা হয়। এই ঘটনাকে অনেকে দেখেছেন একজন জনপ্রিয় রাজনিতিকের কণ্ঠ রোধ করতে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর প্রচেষ্টা হিসেবে।

তাঁর অপসারণের ফলে ২৪ কোটি জনসংখ্যার এই দেশ রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিমজ্জিত হয়, যা এখনো চলমান। এর ফলে, অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে দেশি ও বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে শরিফের প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।

প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালের অগাস্ট মাসে দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। তিনি আরও কয়েক ডজন মামলায় জড়িয়ে আছেন, যেগুলো তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, সামরিক বাহিনী তার ক্ষমতায় ফেরার রাস্তা বন্ধ করার জন্য এসব করছে।

 

খান অভিযোগ করেন যে, সামরিক বাহিনী গত বছরের নির্বাচনে তাঁর দলের বিজয় আটকানোর জন্য জালিয়াতি করেছে, যার ফলে শরিফ একটি জোট সরকার গঠন করতে পেড়েছে। শরিফ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে।

তথ্যসূত্র/ VOA

Side banner

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর

Side banner
Link copied!