ধর্ষণ-নিপীড়ন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সচেতন নারীরা। গতকাল (৭ মার্চ ) বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বাসস সূত্রে জানা যায়,
এসময় নারীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে অনেক পুরুষকেও কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়। সমাবেশে কেউ বক্তব্য রাখেননি। তবে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা তাদের দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশের এক পর্যায়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি পড়ে শোনান এক নারী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সকল নারীদের নিরাপত্তা এখন একটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশজুড়ে সমাজের সকল স্তরের নারীদের বিরুদ্ধে হয়রানি, নির্যাতন, ধর্ষণ, গণপিটুনি ও সাইবার বুলিংয়ের উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটছে। এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই, বরং এটি নারীদের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত সহিংসতা ও ভয় দেখানোর ধারাবাহিক প্যাটার্নের অংশ।
এতে বলা হয়, ঢাকার শ্যামলীতে যৌনকর্মীদের ওপর হামলা, লালমাটিয়ায় দুই শিক্ষার্থীর ওপর জনসমক্ষে নির্যাতন ও হয়রানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী স্টাফের হাতে এক শিক্ষার্থীর হয়রানির ঘটনা, কক্সবাজারে হিজড়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, রংপুর ও জয়পুরহাটে মেয়েদের ফুটবল মাঠে আক্রমণ, ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর নারীদের ওপর অব্যাহত নিপীড়ন এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নারীদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনের হয়রানি, মব এটাক উল্লেখযোগ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, নারীদের প্রতি সহিংসতার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও প্রতিশোধমূলক হামলা, হুমকি ও সংগঠিত মব এটাক হচ্ছে। গণ-আন্দোলন এবং জনগণের স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীনতার দাবীর মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের কাছে দেয়া তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং নারীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক হামলার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান তারা।
তারা নারী এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর ওপর সংঘবদ্ধ হামলা, প্রকাশ্য বিদ্বেষমূলক প্রচারণা ও উস্কানিমূলক কার্যক্রম অবিলম্বে অবসানের দাবী জানিয়েছেন।
তারা বলেন,আমাদের দাবী, সকল শ্রেণি, ধর্ম, জাতি ও পরিচয়ের নারী যেন নিরাপদে ও নির্ভয়ে তাদের অধিকার চর্চা করতে পারে। এজন্য আমরা আমাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।
সমাবেশে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন নারীরা।
এসময় তারা কয়েকটি দাবি জানান। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই তার শাসন কাঠামোর দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে; সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নারীদের বিরুদ্ধে চলমান গণহামলা, গণপিটুনি, টার্গেটেড আক্রমণ, হয়রানি এবং ধর্ষণের ঘটনা প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
তারা বলেন, গণমাধ্যমকে ভুল তথ্য প্রচার বন্ধ করতে হবে এবং জনমত গঠনে তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে; সাইবার বুলিং বন্ধ ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।